মায়ানমার, যা পূর্বে বার্মা নামে পরিচিত ছিল, প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ একটি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশ, যার অর্থনীতি ঐতিহাসিক বাণিজ্য সম্পর্ক, কৌশলগত অবস্থান এবং সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সংস্কারের দ্বারা গঠিত। চীন, ভারত, থাইল্যান্ড, লাওস এবং বাংলাদেশের মধ্যে অবস্থিত এই দেশটি আঞ্চলিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ক্রমবর্ধমানভাবে বিশ্ব বাজারে একীভূত হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বিশেষ করে ২০১০ এর দশকের গোড়ার দিকে দেশটির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার শুরু হওয়ার পর থেকে, মিয়ানমারের আমদানি শুল্ক কাঠামোতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনগুলির লক্ষ্য বাণিজ্য পদ্ধতি সহজ করা, বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করা এবং শিল্প প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করা।
মায়ানমারের শুল্ক নিয়ন্ত্রণ মায়ানমার শুল্ক বিভাগ দ্বারা নির্ধারিত হয়, যা পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পড়ে । শুল্ক হার পণ্যের জন্য হারমোনাইজড সিস্টেম (HS) কোডের উপর ভিত্তি করে এবং বিভিন্ন পণ্য বিভাগে পরিবর্তিত হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) সদস্য হিসেবে, মায়ানমার বাণিজ্য উদারীকরণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে সময়ের সাথে সাথে শুল্ক হ্রাস অন্তর্ভুক্ত। তবে, অনেক পণ্য এখনও উল্লেখযোগ্য আমদানি শুল্কের সম্মুখীন হয় এবং সরকার নির্দিষ্ট কিছু দেশ এবং বাণিজ্য ব্লকের পণ্যের জন্য অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক হার চালু করেছে।
মায়ানমারের আমদানি শুল্ক কাঠামোর সাধারণ সারসংক্ষেপ
মায়ানমারের আমদানি শুল্ক ব্যবস্থা সুরেলা ব্যবস্থা (HS) এর উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা ব্যবসায়িক পণ্যের জন্য একটি আন্তর্জাতিক শ্রেণীবিভাগ যা শুল্ক কর্তৃপক্ষকে আমদানির জন্য স্ট্যান্ডার্ড হার প্রয়োগ করতে দেয়। মায়ানমারে আমদানি শুল্ক বিস্তৃত পণ্যের উপর আরোপ করা হয়, যার মধ্যে সাধারণ শুল্ক হার (GRD) সবচেয়ে সাধারণ, যা সাধারণত পণ্যের উপর নির্ভর করে 5% থেকে 40% পর্যন্ত হয়। অতিরিক্তভাবে, দেশে প্রবেশকারী পণ্যের উপর মূল্য সংযোজন কর (VAT) এবং অন্যান্য আমদানি-সম্পর্কিত কর প্রয়োগ করা যেতে পারে।
মায়ানমারের ট্যারিফ কাঠামোর প্রধান উপাদান:
- স্ট্যান্ডার্ড ট্যারিফ: বেশিরভাগ আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এগুলি পণ্যের মূল্য বা তাদের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে গণনা করা হয়।
- অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক: মিয়ানমারের সাথে দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (যেমন, আসিয়ান মুক্ত বাণিজ্য এলাকা (AFTA) বা চীন-মিয়ানমার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ) আছে এমন দেশগুলি থেকে উৎপাদিত পণ্যগুলি হ্রাসকৃত শুল্ক বা ছাড়ের সুবিধা পেতে পারে।
- আবগারি শুল্ক: অ্যালকোহল, তামাক এবং বিলাসবহুল জিনিসপত্রের মতো নির্দিষ্ট পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
- শুল্ক প্রক্রিয়াকরণ ফি: বেশিরভাগ পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড়পত্রের জন্য অতিরিক্ত ফি হিসেবে প্রযোজ্য, সাধারণত পণ্যের মোট মূল্যের প্রায় ০.৫%।
১. কৃষি পণ্য এবং খাদ্যদ্রব্য
কৃষি হলো মায়ানমারের অর্থনীতির ভিত্তি, যা এর জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। তবে, জলবায়ু পরিস্থিতির কারণে, স্থানীয় উৎপাদনের পরিপূরক হিসেবে কিছু কৃষি পণ্য আমদানি করতে হয়। কৃষি পণ্য এবং খাদ্যদ্রব্যের জন্য শুল্ক কাঠামোর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নীচে দেওয়া হল।
১.১. শস্য এবং শস্যদানা
মায়ানমার তার চাল উৎপাদনের জন্য পরিচিত কিন্তু অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে গম এবং ভুট্টার মতো অন্যান্য খাদ্যশস্য আমদানি করে।
- আমদানি শুল্ক হার:
- চাল: চাল বেশিরভাগই দেশে উৎপাদিত হয়; তবে, আমদানি করা চালের উৎপত্তিস্থল এবং বাণিজ্য চুক্তির উপর নির্ভর করে ৫% থেকে ১০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা যেতে পারে।
- গম: সাধারণত ১০% শুল্ক হার প্রযোজ্য।
- ভুট্টা: সাধারণত প্রায় ১০% আমদানি শুল্কের সম্মুখীন হয়।
- বিশেষ শর্তাবলী:
- আসিয়ান সদস্য দেশগুলি থেকে গম এবং ভুট্টা আমদানি আসিয়ান মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল (AFTA) এর অধীনে অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক পেতে পারে ।
১.২. মাংস এবং মাংসজাত দ্রব্য
মায়ানমারের দেশীয় মাংস শিল্প মূলত মুরগি এবং শুয়োরের মাংসের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যেখানে গরুর মাংস এবং খাসির মাংস মূলত আমদানি করা হয়।
- আমদানি শুল্ক হার:
- গরুর মাংস: সাধারণত ১০% থেকে ২০% শুল্কের সম্মুখীন হতে হয়।
- মাটন: একইভাবে ১৫% থেকে ২০% হারে কর ধার্য।
- হাঁস-মুরগি: হাঁস-মুরগির মাংস আমদানিতে প্রায় ৫% থেকে ১০% শুল্ক আরোপ করা হয়।
- বিশেষ শর্তাবলী:
- ASEAN এবং দক্ষিণ এশিয়া মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল (SAFTA) চুক্তির কারণে থাইল্যান্ড এবং ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের শুল্ক হ্রাসের সুবিধা পেতে পারে।
১.৩. দুগ্ধজাত দ্রব্য
দুগ্ধজাত পণ্যের আমদানি উল্লেখযোগ্য, বিশেষ করে দুধের গুঁড়ো, পনির এবং মাখন, যা ভোক্তাদের ব্যবহার এবং খাদ্য উৎপাদন উভয়ের জন্যই অপরিহার্য।
- আমদানি শুল্ক হার:
- দুধ এবং পনির: দুধের গুঁড়ো এবং পনিরের মতো দুগ্ধজাত পণ্যের উপর সাধারণত ১০% থেকে ১৫% কর আরোপ করা হয়।
- মাখন: সাধারণত ১৫% থেকে ২০% শুল্ক দিতে হয়।
- বিশেষ শর্তাবলী:
- ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে দুগ্ধ আমদানি কম শুল্কের সুবিধা পেতে পারে, বিশেষ করে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির অধীনে।
১.৪. ফলমূল এবং শাকসবজি
ফল ও সবজি উৎপাদনের অভ্যন্তরীণ সীমাবদ্ধতার কারণে, মায়ানমার বিভিন্ন ধরণের পণ্য আমদানি করে, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে।
- আমদানি শুল্ক হার:
- তাজা শাকসবজি: সাধারণত প্রায় ১০% থেকে ১৫% হারে কর ধার্য হয়।
- তাজা ফল (যেমন, কলা, আপেল): সাধারণত ৫% থেকে ২০% পর্যন্ত শুল্ক প্রযোজ্য।
- টিনজাত ফল ও সবজি: টিনজাত ফল ও সবজির উপর ১৫% থেকে ২০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা যেতে পারে।
- বিশেষ শর্তাবলী:
- চীন ও ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে আমদানি প্রায়শই ASEAN-এর মতো আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তির অধীনে হ্রাসকৃত শুল্কের সুবিধা পায় ।
২. উৎপাদিত পণ্য এবং শিল্প সরঞ্জাম
মায়ানমারের শিল্প খাত ক্রমবর্ধমান হচ্ছে, এবং যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম এবং অন্যান্য শিল্প পণ্যের আমদানি উন্নয়নের গতি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২.১. যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম
যেহেতু মায়ানমার তার শিল্প ভিত্তি আধুনিকীকরণ করতে চাইছে, তাই নির্মাণ, উৎপাদন এবং জ্বালানি খাতের জন্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম অপরিহার্য আমদানি।
- আমদানি শুল্ক হার:
- ভারী যন্ত্রপাতি: ভারী যন্ত্রপাতির উপর আমদানি শুল্ক সাধারণত ৫% থেকে ১০% পর্যন্ত হয়।
- শিল্প সরঞ্জাম: অন্যান্য ধরণের যন্ত্রপাতি, যেমন জেনারেটর, ট্রান্সফরমার এবং উৎপাদন লাইন সরঞ্জাম, সাধারণত ১০% শুল্কের সম্মুখীন হয়।
- বিশেষ শর্তাবলী:
- নির্দিষ্ট শিল্পের জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জাম, যেমন শক্তি এবং উৎপাদন, নির্দিষ্ট ASEAN চুক্তির অধীনে শুল্ক ছাড় বা হ্রাসের জন্য যোগ্য হতে পারে ।
২.২. ইলেকট্রনিক্স এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম
মায়ানমার ইলেকট্রনিক্সের একটি ক্রমবর্ধমান বাজার, যার মধ্যে রয়েছে স্মার্টফোন এবং গৃহস্থালী যন্ত্রপাতির মতো ভোগ্যপণ্য, সেইসাথে শিল্প সরঞ্জাম।
- আমদানি শুল্ক হার:
- কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স (যেমন, স্মার্টফোন, টেলিভিশন): সাধারণত ১০% থেকে ১৫% হারে কর ধার্য হয়।
- শিল্প ইলেকট্রনিক্স (যেমন, বৈদ্যুতিক প্যানেল, ট্রান্সফরমার): সাধারণত ৫% থেকে ১০% পর্যন্ত শুল্কের সম্মুখীন হতে হয়।
- বিশেষ শর্তাবলী:
- দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বা ASEAN-চীন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ACFTA) এর কারণে দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীন প্রায়শই হ্রাসকৃত শুল্ক উপভোগ করে ।
২.৩। মোটরযান এবং যন্ত্রাংশ
মায়ানমারের মোটরগাড়ি বাজার দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে, এবং বাণিজ্যিক এবং ব্যক্তিগত উভয় ব্যবহারের জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যানবাহন আমদানি করা হয়।
- আমদানি শুল্ক হার:
- যাত্রীবাহী যানবাহন: সাধারণত ৩০% থেকে ৪০% হারে কর ধার্য করা হয়, যা গাড়ির ইঞ্জিনের আকার এবং বয়সের উপর নির্ভর করে।
- বাণিজ্যিক যানবাহন: ট্রাক এবং বাসের জন্য শুল্ক হার সাধারণত ১০% থেকে ১৫% পর্যন্ত হয়।
- অটোমোবাইল যন্ত্রাংশ: সাধারণত ১০% থেকে ১৫% শুল্ক আরোপ করা হয়।
- বিশেষ শর্তাবলী:
- বাণিজ্য ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে জাপানের সাথে মিয়ানমারের চলমান সহযোগিতার কারণে জাপান থেকে আমদানি করা পণ্যগুলি অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা পেতে পারে।
৩. ভোগ্যপণ্য এবং বিলাসবহুল জিনিসপত্র
মায়ানমারের উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কারণে ইলেকট্রনিক্স, পোশাক এবং বিলাসবহুল পণ্য সহ আমদানিকৃত ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩.১. পোশাক এবং পোশাক
মায়ানমারে পোশাক এবং বস্ত্র একটি প্রধান আমদানি পণ্য, ফ্যাশন এবং টেকসই পণ্যের চাহিদা ক্রমবর্ধমান।
- আমদানি শুল্ক হার:
- পোশাক: পণ্যের উপর নির্ভর করে আমদানি শুল্ক সাধারণত ২০% থেকে ৪০% পর্যন্ত হয়।
- বস্ত্র ও কাপড়: দেশীয় বস্ত্র শিল্পের কাঁচামালের উপর ১০% থেকে ২০% শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।
- বিশেষ শর্তাবলী:
- সাফটা এবং আসিয়ান-চীন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অধীনে ভারত ও চীন কিছু টেক্সটাইল পণ্যের জন্য অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক উপভোগ করে ।
৩.২. ইলেকট্রনিক্স এবং গৃহস্থালী সামগ্রী
মায়ানমারের ভোক্তা বাজার সম্প্রসারণের সাথে সাথে মোবাইল ফোন, রেফ্রিজারেটর এবং টেলিভিশনের মতো ইলেকট্রনিক্স পণ্যের আমদানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- আমদানি শুল্ক হার:
- কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স: সাধারণত ১০% থেকে ২০% হারে কর ধার্য করা হয়।
- গৃহস্থালীর জিনিসপত্র: রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন এবং এয়ার কন্ডিশনারের মতো গৃহস্থালীর যন্ত্রপাতির উপর সাধারণত ১৫% থেকে ২০% শুল্ক আরোপ করা হয়।
- বিশেষ শর্তাবলী:
- চলমান বাণিজ্য সম্পর্কের কারণে দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান ইলেকট্রনিক্স পণ্যের উপর অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক হার অফার করতে পারে।
৩.৩. প্রসাধনী এবং ব্যক্তিগত যত্ন পণ্য
মায়ানমারে প্রসাধনী পণ্য দ্রুত বর্ধনশীল একটি আমদানি খাত, বিশেষ করে সুগন্ধি, মেকআপ এবং ত্বকের যত্নের পণ্যের মতো বিলাসবহুল পণ্য।
- আমদানি শুল্ক হার:
- প্রসাধনী: সাধারণত ২০% থেকে ৩০% আমদানি শুল্ক প্রযোজ্য।
- সুগন্ধি এবং সুগন্ধি: এই পণ্যগুলিতে ৩০% বা তার বেশি শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।
- বিশেষ শর্তাবলী:
- ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমদানি করা প্রসাধনী এবং বিলাসবহুল পণ্যগুলি বিশেষ করে আসিয়ান-ইইউ সহযোগিতা চুক্তির অধীনে অগ্রাধিকারমূলক চিকিৎসার সুবিধা পেতে পারে ।
৪. নির্দিষ্ট কিছু দেশের জন্য বিশেষ আমদানি শুল্ক
মিয়ানমার বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তিতে প্রবেশ করেছে যা আমদানি শুল্ককে প্রভাবিত করে, বিশেষ করে আসিয়ান সদস্য দেশ এবং চীন ও ভারতের মতো দেশগুলির সাথে। মিয়ানমারের শুল্ক কাঠামোকে প্রভাবিত করে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি নিম্নরূপ:
4.1। আসিয়ান মুক্ত বাণিজ্য এলাকা (AFTA)
- আসিয়ান মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল (AFTA) চুক্তির অধীনে বেশিরভাগ পণ্যের উপর কম শুল্কের সুবিধা ASEAN সদস্যরা উপভোগ করে। থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনামের মতো দেশগুলি অনেক পণ্যের উপর হ্রাসকৃত বা শূন্য-শুল্ক হার উপভোগ করে।
৪.২. চীন-মিয়ানমার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি
- চীন-মিয়ানমার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অধীনে, মায়ানমার চীন থেকে অনেক পণ্য হ্রাসকৃত বা শূন্য শুল্কে আমদানি করে, বিশেষ করে কৃষি ও শিল্প খাতে।
৪.৩. দক্ষিণ এশিয়া মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল (SAFTA)
- SAFTA-এর অধীনে ভারত অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক হার উপভোগ করে, বিশেষ করে কৃষি পণ্য এবং বস্ত্রের জন্য।
মায়ানমার সম্পর্কে প্রধান তথ্য
- সরকারি নাম: মায়ানমার ইউনিয়ন প্রজাতন্ত্র
- রাজধানী: নেপিডো
- বৃহত্তম শহর: ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়, নেপিদো
- মাথাপিছু আয়: আনুমানিক $১,৫০০ মার্কিন ডলার (২০২৩)
- জনসংখ্যা: ৫৪ মিলিয়নেরও বেশি (২০২৩)
- সরকারি ভাষা: বার্মিজ
- মুদ্রা: মায়ানমার কিয়াত (MMK)
- অবস্থান: মায়ানমার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অবস্থিত, বাংলাদেশ, ভারত, চীন, লাওস এবং থাইল্যান্ডের সীমানা বেষ্টিত, বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগরের উপকূলরেখা সহ।
মায়ানমারের ভূগোল, অর্থনীতি এবং প্রধান শিল্প
ভূগোল
মায়ানমার একটি বৃহৎ দেশ যেখানে বিভিন্ন ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পাহাড়, বন এবং সমভূমি। দেশের বৃহত্তম নদী ইরাবতী নদী উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়, যা কৃষির জন্য উর্বর জমি প্রদান করে। মায়ানমার পাঁচটি দেশের সাথে সীমান্ত ভাগ করে নেয় এবং বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগর বরাবর একটি দীর্ঘ উপকূলরেখা রয়েছে।
অর্থনীতি
মায়ানমারের অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর, যেখানে কৃষি জিডিপির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। তবে, দেশটিতে তেল, গ্যাস এবং মূল্যবান ধাতু সহ যথেষ্ট খনিজ সম্পদ রয়েছে এবং উৎপাদন, নির্মাণ এবং পরিষেবার মতো খাতে অগ্রগতি হচ্ছে। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বাজারের সাথে উদারীকরণ এবং সংহতকরণ অব্যাহত থাকায় মিয়ানমারের অর্থনীতি ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান শিল্প
- কৃষি: ধান, ডাল, শিম এবং রাবার হল প্রধান ফসল।
- জ্বালানি: মায়ানমারে প্রচুর প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে এবং এটি প্রাকৃতিক গ্যাসের একটি উল্লেখযোগ্য রপ্তানিকারক।
- খনিজ সম্পদ: মায়ানমার মূল্যবান পাথরে সমৃদ্ধ, বিশেষ করে জেড এবং রুবি, এবং তামা ও সোনার উল্লেখযোগ্য মজুদও রয়েছে।
- উৎপাদন: উৎপাদন খাত ক্রমবর্ধমান, বস্ত্র উৎপাদন এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মূল উপাদান।